হোয়াইট হাউজে ১৩ই ফেব্রুয়ারি অপরাহ্নে নরেন্দ্র মোদির সাথে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বৈঠকের সময় রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি থেকে ২৬০ মাইল দূর নিউ হ্যাম্পশায়ার স্টেট পার্লামেন্টে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে একটি রেজ্যুলেশন (এইচআর ১১) পাশ হয় ৩২৮-৪১ ভোটে।
রিপাবলিকান এবং ডেমোক্রেট- উভয় পার্টির অকুন্ঠ সমর্থনের এই রেজ্যুলেশনে হোয়াইট হাউজ, কংগ্রেস, স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রতি উদাত্ত আহবান জানানো হয় অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হত্যা, গ্রেপ্তার ও বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দেয়ার মত হিংসাত্মক আচরণ বন্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্যে।
‘আর্জিং দ্য ইউনাইটেড স্টেটস গভর্নমেন্ট টু ইনভেস্টিগেট অ্যালিগেশন্স অব অ্যাবিউজ অব মাইনরিটিজ, স্পেশালি হিন্দুজ, বুড্ডিস্টস, ক্রিস্টিয়ান্স, অ্যান্ড আদার রিলিজিয়াস মাইনরিটিজ বাই দ্য ইন্টেরিম গভর্নমেন্ট অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক রেজ্যুলেশনে উল্লেখ করা হয়েছে, ইসলামিক মৌলবাদিদের উষ্কানিতে তথাকথিত ছাত্র আন্দোলনে শেখ হাসিনার সরকার পরিবর্তনের পর ধর্মীয় সংখ্যালঘু নিধন, ধর্মীয় উপাসনালয় ধ্বংস, জাতির জনকের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেয়া, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও প্রথিতযশা সাংবাদিকদের হেনস্থা, গ্রেপ্তার ও খুন করা, শাহ পরাণ এবং দেওয়ানবাগ, গরিবউল্লাহ শাহ মাজারসহ ৫০টি মাজারে হামলা, অগ্নিসংযোগে ধ্বংস করা, এমনকি ৩০ লাখ শহিদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস মুছে ফেলার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে ড. ইউনূসের নেতৃত্বে।
এহেন অপকর্মের বিরুদ্ধে কথা বললেই খুন হতে হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের; শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের সাথে সংশ্লিষ্ট ছিলেন এমন মন্ত্রী-এমপি, রাজনীতিকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের এবং গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এমনকি শতশত পুলিশ অফিসারকেও হত্যার ঘটনা ঘটেছে এবং এখনো পুলিশের ওপর বর্বরোচিত আক্রমণের ঘটনা ঘটছে। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড অব্যাহত রয়েছে গোটা বাংলাদেশে।
এই রেজ্যুলেশন উত্থাপন করেছিলেন নিউ হ্যাম্পশায়ার স্টেটের রকিংহাম ডিস্ট্রিক্ট-৩০ এর রিপ্রেজেনটেটিভ (রিপাবলিকান) আবুল বি খান। বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের যুক্তরাষ্ট্র শাখার অন্যতম সহ-সভাপতি আবুল বি খানের উত্থাপিত রেজুলেশনটি বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় পাশের পর পার্লামেন্ট ভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে কো-স্পন্সর ডোগ থমাস এবং জোনা হুইলারকে পাশে নিয়ে আবুল বি খান বলেন,
মাতৃভূমি ছেড়ে ৪৫ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রে এলেও মাঝেমধ্যেই বাংলাদেশে যাই নাড়ির টানে। কিন্তু গত ৫ আগস্টে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কথিত এক ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উচ্ছেদের পর বাংলাদেশে এক অসহনীয় পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা আক্রান্ত হচ্ছেন। হত্যা করা হচ্ছে পুলিশ-প্রশাসনের সামনে। এমনকি কদিন আগে বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে জাতির পিতার স্মৃতি বিজড়িত ভবনটিকে। লুট-তরাজের পর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয় সেনাবাহিনীর সামনে।